গ্রাম্য বালকের জীবনের গল্প
একটি গ্রাম্য বালকের জীবনের গল্প : Don’t be depressed , If you want you can touch your dream .
আজ এক বালকের গল্প শোনাবো , শোনানোর উদ্দেশ্য হচ্ছে তোমরা যারা বাচ্চা – কাচ্চা আছো তাদের একটা উদাহরন দেখানো যে তুমিও চাইলে সফল মানুষদের একজন হতে পারো । বিশেষ করে যারা ভাবে যে আমারে দিয়ে কিচ্ছু হবে না , আমি অন্যদের চেয়ে অনেক নিচে আছে তাদের জন্য এই গল্প ।
আচ্ছা শুরু করা যাক , বরিশাল শহর থেকে দূরে অজপাড়ায় এই বালকের বাস ।
যেসব এলাকায় নদী আছে সেখানে চর নামে একটা এলাকা থাকে অর্থাত্ নদী ভাঙনের পর একপাশে চর জেগে ওঠে এবং সে মানব বসতি গড়ে ওঠে ।
এরকম একটি চরে এই বালক তাহার মাতার সহিত বাস করে । বালকদের বাড়ির পাশ দিয়ে ছোট খালের মত একটা আছে , গ্রাম্য ভাষায় ঐটাকে ব্যাড় বলে ।
ঐ ব্যাড়ে বর্ষায় ছয়মাস পানি থাকে ফলে চলাচল করতে হয় নৌকায় বা কলা গাছের ভেলায় ।
যাই হোক সেই চরে একটা “সাইক্লোন সেন্টার” ছিলো সেটা প্রাইমারী স্কুল হিসাবে ব্যাবহৃত হয় । সেখান থেকে বালক পঞ্চম শ্রেনীতে পাস করে ।
বালকের মাতা বালককে অন্যদের সহিত কখনো খুব একটা বেশী মিশার সুযোগ দেয় নাই , এর কারন হয়ত তিনি সন্তানকে গ্রাম্য অন্যান্য বালকদের থেকে ভিন্নরূপে গড়ে তুলতে চাইছিলেন এবং বালক সেভাবেই গড়ে উঠছে । বালক মানুষের সাথে খুব একটা মিশে না ।
এবার বালক হাইস্কুলে ভর্তি হবে । তো চর থেকে হেটে গেলে দুই ঘন্টা লাগে এমন দূরত্বে একটা হাইস্কুল আছে এবং সেখানেই বালককে ভর্তি করানো হলো ।
ক্লাস শুরু হওয়ার দুই থেকে আড়াই ঘন্টা আগে বালককে বাড়িতে থেকে স্কুলে রওয়ানা দিতে হতো ।
যাওয়ার পথে একটা নদী পরে সেটা খেয়া দিতে পার হতে হয় , একবার এপাড় থেকে ওপার গিয়ে আবার এপাড় আসতে খেয়ার মোটামুটি দেড় ঘন্টা লাগে । এজন্য হাতে বেশী সময় নিয়ে বাড়ি থেকে বালক স্কুলের উদ্দেশ্য রওয়ানা হতো ।
বর্ষার দিনে যেহেতু বাড়ীর পাশের ব্যাড়ে গলা সমান বা তার বেশী পানি থাকতো তাই এসময় বালক স্কুলে যেতো গলা গাছের ভেলায় পাড় হয়ে । কিন্তু একটা কলা গাছের ভেলা মাসখানেকের বেশী টিকে না ফলে দেখা যেতো বর্ষার অর্ধেক না যেতেই বাড়ির সব কলা গাছ শেষ হয়ে গেছে
। তখন বালক কিভাবে স্কুলে যেতো ?
তখন বালক লুঙি পরে গলা সমান বা তার কম পানিতে ব্যাড় পেরিয়ে ওপার যেতো এবং ওপার গিয়ে প্যান্ট জামা প্যান্ট পরে স্কুলে যেতো ।
এভাবে চলতে থাকলো , বালক এইটে বৃত্তি পেয়েছে ।
নাইনে ওঠার পর বালক সাইন্স গ্রুপ নেয় । বালকদের স্কুলের মোট চার জন তখন শুধু সাইন্স নিয়েছিলো । ঐ স্কুলে সাইন্সের টিচার বলতে একজন ডিগ্রী পাশ স্যার ছিলো যিন পার্ট টাইম চাকুরী করতে ছিলেন স্কুলে ।
তিনিই একমাত্র উচ্চতর গনিত পড়াতে পারতেন । তো বালক টেনে ওঠার পর স্যারের চাকুরী চলে যায় এবং বালক মহাবিপদে পরে কিভাবে এখন কার কাছে উচ্চতর গনিত সহ অন্যান্য সাবজেক্ট পড়বে !
তো বালকের বাসা থেকে স্কুল যত দূর তার দ্বিগুন দূরে স্যারের বাড়ী ছিলো সেখানে যেতেও নদী পরতো । বালকের আর স্কুলে যাওয়া হলো না শুধু স্যারের বাসায় গিয়েই পড়তে লাগলো ।
যথারীতি এস.এস.সি পরীক্ষা হলো এবং কিছুদিন পর রেজাল্ট দিলো , চার জনের সাইন্সের ছাত্র – ছাত্রীর মধ্যে বালকই একমাত্র এ প্লাস পেয়েছে । তাও সবগুলাতে না , রসায়নে পায় নাই ।
এবার বালকের মাতা তাকে নিয়ে ঢাকায় তার পিতার কাছে চলে যায় । পিতা সামান্য বেতনে মসজিদে চাকরী করে , তাই বালককে সরকারী কলেজেই ভর্তি হতে হবে ।
বালক শেষ পর্যন্ত সদরঘাটের কাছে লক্ষীবাজার অবস্থিত কবি নজরুল সরকারী কলেজে ভর্তি হয় ।
বালকের ব্যাচমেট , কোচিংমেট ও কোচিং শিক্ষক অনেকেই বলে এইটা কোন কলেজ হইলো ঐটায় ভর্তি হইছোস ক্যান ?
বালক এড়িয়ে যায় , ভাবে পড়ালেখা নিজের মধ্যে , কলেজ কোন ফ্যাক্টর না ।
অতঃপর এইট.এস.সি পরীক্ষা হয় এবং যথাসময়ে ফলাফল প্রকাশিত হয় । কলেজের তিনশো ছাত্র – ছাত্রীর মধ্যে বালক ও আরো একজন , মোট দুইজন A প্লাস পায় ।
তবে এবার বালকের ইংরেজিতে এ প্লাস মিস হয় ।
বালকের মাতার ইচ্ছা ছিলো তাহার পুত্রকে ডাক্তার বানাবে , বালকেরও তাই ইচ্ছা ছিলো ।
কিন্তু এরি মধ্যে একবার ঘোষনা করা হইছিলো রেজাল্ট দেখে মেডিকেলে ভর্তি করা হবে , তখনই বালকের মেডিকেলে ভর্তির ইচ্ছা শেষ হয়ে যায় , কারন গোল্ডেন এ প্লাস ছাড়া ভর্তি হওয়া যাবে না ।
এরপর বালক বুয়েট বা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির স্বপ্ন দেখে ইঞ্জিনিয়ারিং কোচিং এ ভর্তি হয় । কোচিং চলাকালীন সময়েই রেজাল্ট বের হয় & তখনই দেখা যায় বালকের ইংলিশে এ প্লাস নাই।
তখন বালক কিছুটা হতাশ হয় কারন ইংলিশে এ প্লাস না থাকলে বুয়েটে ভর্তি অনিশ্চিত ।
যাইহোক শেষ পর্যন্ত বালক বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারে , ঢাকার মধ্যে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে শুধু ভর্তি পরীক্ষা দেয় । যেগুলায় দেয় সবগুলায় চান্স পায় ।
চান্স পাওয়ার পর বালক জানতে পারে তার অবস্থান থেকে সিভিল পড়া সম্ভব এবং সেটাই বেছ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন