সোমবার, ১ জানুয়ারী, ২০১৮

সন্দ্বীপ ভ্রমন গাইড

বঙ্গোপসাগের বুকে চট্টগ্রাম জেলার দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপ।অনিন্দ্য সুন্দর এই দ্বীপ ভ্রমন করে আসতে পারেন আপনিও

যাতায়াত :
সন্দ্বীপ যেতে সড়কপথে ঢাকা-চট্টগ্রামী যেকোন দূরপাল্লার বাসে চড়ে বসুন। নামতে হবে কুমিরা। আপনার বাসকে কুমিরা স্টিমার ঘাট যাবার স্ট্যান্ডে নামিয়ে দিতে বলুন। সেখান থেকে অটো বা রিক্সায় চলে যান কুমিরা স্টিমার ঘাট। এখান থেকে যেতে হবে জলপথে সন্দ্বীপ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাট। মূল ভূখণ্ড থেকে সন্দ্বীপে যাওয়ার একমাত্র পথ এই জলপথ।

কুমিরা স্টিমার ঘাট থেকে সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাটের যাওয়ার দ্রুততম উপায় স্পিড বোট। যেতে সময় লাগে আধা ঘণ্টার মত, ভাড়া পড়বে জনপ্রতি ৩০০ টাকা। স্পিড বোটের জন্য আপনাকে প্রথমে সিরিয়াল নিতে হবে। এরপর মূল ঘাটে গিয়ে অপেক্ষা করতে হবে আপনার সিরিয়াল অনুযায়ী স্পিড বোটে উঠার জন্য। উত্তাল জলপথের এই অ্যাডভেঞ্চারময় অংশটুকু সারা জীবনের স্মৃতি হয়ে থাকতে পারে। এছাড়াও সময়ে সময়ে ট্রলার ছেড়ে যায় কুমিরা স্টিমার ঘাট থেকে, যাতে যেতে বেশ সময় লাগে।

সন্দ্বীপের ভেতর অভ্যন্তরীণ ভ্রমণে ব্যবহার করুন লোকাল ভাড়ায় চালিত সিএনজি।

কুমিরা স্টিমার ঘাট

ভ্রমণ পরিকল্পনা

সন্দ্বীপে দিনে গিয়ে দিনে ফেরার ভ্রমণ পরিকল্পনা করা যেতে পারে। আবার একরাত সন্দীপে থাকার পরিকল্পনাও করা যেতে পারে। দিনে গিয়ে দিনে ফিরতে চাইলে ঢাকা হতে আগের রাতে যথাসম্ভব আগের বাসে উঠুন। সকাল সকাল কুমিরা স্টিমার ঘাট পৌঁছে সন্দ্বীপ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে সন্দ্বীপ ভ্রমণ করুন। আবার বিকাল বিকাল মূল ভূখণ্ডে ফিরে আসুন এবং সীতাকুণ্ড হতে ঢাকার বাস ধরুন। সন্দ্বীপে একদিনের ভ্রমণে অবশ্যই দিনের ভেতর মূল ভূখণ্ডে ফেরত আসুন, শেষ স্পিড বোট ছাড়ার সময়সূচি জেনে তারপর ভ্রমণ করুন।

এছাড়া চট্টগ্রাম বা সীতাকুণ্ড ভ্রমণ করেও সন্দ্বীপকে ভ্রমণের তালিকায় রাখতে পারেন।

দর্শনীয় স্থান

কুমিরা স্টিমার ঘাটের আশেপাশে চোখে পড়বে জাহাজ ভাঙ্গা শিল্প।

কুমিরা স্টিমার ঘাট ছেড়ে যাবার ও ফিরে আসার সময় চোখে পড়বে সীতাকুণ্ড রেঞ্জের পাহাড়গুলো।

সন্দ্বীপে মরিয়ম বিবি সাহেবানী মসজিদ

সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাটের প্রাকৃতিক পরিবেশ- ম্যানগ্রোভ বেষ্টনী

এবং বিশেষভাবে সন্দ্বীপের পশ্চিম পাড়ের প্রাকৃতিক পরিবেশ, সন্দ্বীপ ভ্রমণের বেশি সময় এখানেই অতিবাহিত করতে পারেন।

থাকার স্থান

সন্দ্বীপের মূল শহর এলাকা এনাম-নাহার মোড়ে রয়েছে ২/১ টি হোটেল। এছাড়াও আরও এগিয়ে সেনেরহাট এলাকায় রয়েছে একটি উন্নত মানের হোটেল। এছাড়া অনুমতি নিয়ে থাকতে পারেন উপজেলা পরিষদের ডাক বাংলোতে (মাহমুদুর রহমান ০১৮১১৩৪১৭২২)।

গুপ্তাছড়া ঘাটের আশেপাশের প্রাকৃতিক পরিবেশ

খাবার-দাবার

সকালের নাস্তা গুপ্তছড়া ঘাটে সিএনজি স্ট্যান্ড থেকেই করে নিতে পারেন।

সেনেরহাটে, উপজেলা পরিষদের ডাক বাংলোর আশেপাশে মোটামুটি মানের কয়েকটি খাবার হোটল রয়েছে (যেমন, সোহরাবের হোটেল)।

সন্দ্বীপের মোড়ে মোড়ে পাওয়া যায় সিঙ্গারা। নিতে পারেন সন্দ্বীপের সিঙ্গারার স্বাদ।

কাম্পিংয়ের সম্ভাব্য স্থান

সন্দ্বীপের পশ্চিম পাড়।

ভ্রমণ মৌসুম

ভ্রমণের আদর্শ সময় শীতকাল। বছরের বাকিটা সময় জলপথ বেশ উত্তাল থাকে।

খরচ

দিনে গিয়ে দিনে ফিরে সন্দ্বীপ ভ্রমণের জন্য ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকা যথেষ্ট।

পরামর্শ

সন্দ্বীপে বিদ্যুৎতের সমস্যা রয়েছে। এটা মাথায় রেখেই সন্দ্বীপে অবস্থান করবেন।

স্পিড বোটে জলপথে ভ্রমণের সময় অবশ্যই বোটে রাখা লাইফ জ্যাকেট পরিধান করবেন।

অনেক সময় আবহাওয়ার কারণে নৌযান চলাচল বন্ধ থাকে। এজন্য হাতে বাড়তি একদিন সময় নিয়ে ভ্রমণ করলে ভাল।