বৃহস্পতিবার, ১৭ মে, ২০১৮

তারাবিহ এর নামাযে রাকায়াত বিতর্কের সমাধান

তারাবীহ নামাজের রাকাআত নিয়ে ঈমাম ইবনু তাইমিয়া র. এর ফাতওয়া :

ইমাম ইবনু তাইমিয়া (র) এর  ফাতওয়া যদি কেউ পড়ে দেখেন, তাহলে আশা করি তারাবীহ নামাজের রাকাআত নিয়ে তিনি বিতর্ক করবেন না। 'মাজমূ’উল ফাতাওয়া' কিতাবে তিনি তারাবীহ এর রাক'আত নিয়ে অত্যন্ত সুস্পষ্ট মতামত ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন-
-
১০
কিয়ামু রমাদ্বান ( অর্থাৎ- তারাবীহের নামাজ) এর ব্যাপারে নবী (সা) কোন নির্দিষ্ট সংখ্যা নির্ধারণ করেন নি। কিন্তু তিনি রমাদ্বান কিংবা রমাদ্বান ছাড়া অন্য সময়ে ১৩রাক’আতের বেশী পড়তেন না। তবে তিনি রাক’আতগুলো অনেক দীর্ঘ করে পড়তেন।
২০
উমার (রা) এর সময়ে উবাই ইবনু কা’ব (রা) সাহাবাদের নিয়ে ২০রাক’আত পড়তেন এবং তার সাথে ৩রাক’আত বিতর পড়তেন। আর রাক’আতের সংখ্যা বাড়ার কারণে কিরা’আত সংক্ষেপ করতেন মুসল্লিদের জন্য সহজ করার উদ্দেশ্যে। কারণ  দীর্ঘ সময় নিয়ে এক রাকা’আত পড়ার চেয়ে অল্প-অল্প করে অধিক রাক’আত পড়া বেশী সহজ।
৪০
পরবর্তীতে সালাফদের কিছু লোক ৪০রাক’আত পড়তেন  এবং তার সাথে ৩রাক’আত বিতর পড়তেন।
৩৬
সালাফদের মধ্যে আবার কিছু লোক, ৩৬রাক’আত পড়তেন তার সাথে ৩রাক’আত বিতর পড়তেন।
-
এগুলো (অর্থাৎ-১০, ২০, ৩৬, ৪০ রাক’আত) সবগুলোই গ্রহণযোগ্য। তাই উক্ত পদ্ধতিগুলোর যে কোন একটির আলোকে যদি কেউ রমাদ্বানে কিয়ামুল লাইল (তারাবীহ) পড়ে তাহলে সে উত্তম কাজ করলো।
-
তবে এ ক্ষেত্রে সর্বোত্তম কোনটি তা  মুসল্লিদের অবস্থার উপর নির্ভর করবে। যদি মুসল্লিরা দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে সক্ষম হন, তাহলে তাদের জন্য (দীর্ঘ কিরা'আতে) ১০রাক’আত পড়ে ৩রাক’আত বিতর পড়াই উত্তম যেমনটি রাসূল (সা) করতেন ।
-
আর যদি মুসল্লিরা দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে অপারগ হন, তাহলে তাদের জন্য জন্য ২০রাক’আত পড়ে ৩রাক’আত বিতর পড়াই উত্তম, যেমনটি অধিকাংশ মুসলিমরা করতেন । এতে মধ্যম পন্থাও অবলম্বন করা হয়। কারণ ২০ রাক’আত হলো ১০ ও ৪০ এর এর মাঝামাঝি।
-
আর কেউ যদি ৪০  বা ৩৬রাক’আত পড়ে সেটাও জায়িয আছে।এগুলোর কোনটাই মাকরূহ নয়। ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বাল (র) ছাড়াও একাধিক ইমাম এ মত দিয়েছেন।
-
আর যে  মনে করে কিয়ামু রমা্দ্বান (তারাবীহ) এর রাক’আত সংখ্যা নবী (সা) নির্ধারণ করে দিয়েছেন; তাই একে বাড়ানো বা কমানো যাবে না, তাহলে  সে ভুল করেছে।
-----------------------------------------------------------------------------------
(ইমাম ইবনু তাইমিয়ার মাজমূ’উল ফাতাওয়া, খ.২২, পৃ.২৭২)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন