বৃহস্পতিবার, ১০ মে, ২০১৮

মালয়েশিয়ার নির্বাচন ২০১৮

লিখেছেন Saqib Helal
মালয়েশিয়া নির্বাচন:

১)  কয়েকদিন আগে লিখেছিলাম যে আগাম নির্বাচন অনেক সময় শাসক দলের জন্য ব্যাকফায়ার হতে  পারে,  নিকট অতীতের কয়েকটি শকিং আগাম নির্বাচনের উদাহরণ দিয়েছিলাম যেমন ২০০৪ সালের  ভারতের নির্বাচন আর ২০১৭ সালের ব্রিটেনের নির্বাচন,  তার সাথে আরেকটি ঐতিহাসিক নির্বাচন যুক্ত হলো।  এই সবগুলো নির্বাচনের প্রাক্কালেই জনমত জরিপে শাসকদলগুলোর নিশ্চিত বিজয়ের কথা  বলা হয়েছিল-  অথচ ফলাফল হয়েছে বিপরীত, এককথায় শকিং!  মালয়েশিয়ার এই নির্বাচন বিভিন্ন পাপ আর জঞ্জালে আবদ্ধ চোখে অন্ধকার দেখা  শাসক আর শাসকদলগুলোর  অতি চালাকি সত্বেও যে শেষ রক্ষা হয় না   তার একটা  টেক্সটবুক উদাহরণ হয়ে থাকবে। 

২) মাহাথির-আনোয়ার জোটের বিজয়ের পেছনে সবচাইতে বেশি কৃতিত্ব আনোয়ার ইব্রাহিমের স্ত্রী আর কন্যার।  দীর্ঘ প্রায় দুই দশক ধরে এমন পারিবারিক বিপর্যয়,   সবচাইতে সেনসিটিভ বিষয়ে আঘাত দিয়ে মানসন্মান নষ্ট করার এমন  নিকৃষ্টতম জঘন্য কুটিলতা,   জেলজুলুম সহ  নানা হয়রানি- ইত্যাদি মোকাবেলা করে একটা  স্বৈরাচারী পাহাড় এর সাথে অনবরত লড়াই করে একপ্রকার শূন্য  থেকে নিজেদের দল/জোটকে আজ ক্ষমতায় নিয়ে এসেছেন এই মা-মেয়ে জুটি।  এরকম তীক্ষ্ন মেধাবী ও সর্বোচ্চ সুশিশিক্ষিত,   অসাধারণ যোগ্যতাসম্পন্ন এবং অদম্য  পরিশ্রমী,  পরিশীলিত আচরণ ও মার্জিত রুচিবোধ ব্যবহার,  সর্বগুণে গুণাণ্বিতা মা-মেয়ে জুটি সারাবিশ্বের ইসলামিস্ট  ফ্যামিলিগুলোতে আর দুয়েকটা আছে কিনা সন্দেহ আছে।  এই বিজয়ের অর্ধেক কৃতিত্ব শুধুমাত্র তাদের দুইজনের।  মাহাথির-আনোয়ার সহ বাকি অন্যরা  সবাই মিলে অর্ধেক!   ডাঃ আজিজাহ ইসমাইল নিজেই প্রাইম মিনিস্টার হবার যোগ্য। তার ত্যাগ অং সান সুচির চাইতে কোন অংশেই কম নয় ।  আনোয়ার ইব্রাহিমের পরম ভাগ্য এমন স্ত্রী পাওয়া,  আর সবচেয়ে বড় সফলতা এমন কন্যা গড়ে তোলা।

৩) আনোয়ার ইব্রাহিম শুধু মালয়েশিয়ার নয়-  বরং সারাবিশ্বের ইসলামিস্ট তথা কনজারভেটিভ মুসলিম নেতৃত্বের মাঝে পাইওনিয়ার ফিগার।  যখন তুরস্ক বা তিউনিশিয়ার ইসলামিস্টদের ক্ষমতায় যাওয়ার কথা কল্পনা করা যেত না তখন আনোয়ার ইব্রাহিম ইসলামিস্ট ব্যাকগ্রাউন্ড সত্বেও অতি সুনাম আর সফলতার সাথেই দীর্ঘকাল ধরে ক্ষমতার কেঁন্দ্রবিন্দুতে।  মুরসি বা ইসমাইল হানিয়া বা এরদোয়ানের নাম শোনার অনেক আগেই আনোয়ার ইব্রাহিম ইসলামিস্টদের কাছে রোল মডেল।  কতটা মেধা, যোগ্যতা আর ক্যারিশমা  থাকলে  একটা  ইসলামিস্ট ব্যক্তি সেক্যুলার পরিবেশে এসেও এমন প্রভাব প্রতিপত্তির সাথে সর্বোচ্চ স্থান পর্যন্ত এগিয়ে যেতে পারে আর নিজের অবস্থান সুদৃঢ় করতে পারে!  তার পলিটিক্যাল আপিল, পার্সোনাল ক্যারিশমা,  আর  প্রফেশনাল কোয়ালিটির সাথে সাথে ইন্টেলেকচুয়াল ডেপ্থ- এক কথায় একজন অলরাউন্ডার।    এতো যোগ্যতা সত্বেও পলিটিক্সের পিচ্ছিল পথে তিনিও হোঁচট খেয়েছেন, কিছু স্ট্র্যাটেজিক  ভুল করেছেন।  এবারের সফলতায় সেসব মুছে যাবে।  তবে তা থেকে আমাদের কিছু শেখার আছে- তাই সেসব  পড়া উচিত।

মাহাথিরের পরে মালয়েশিয়ার প্রাইম মিনিস্টার হবার যোগ্যতম ব্যক্তি যে আনোয়ার ইব্রাহীম তা তো অনেক আগে থেকেই একপ্রকার সবার কাছেই  পরিষ্কার ছিল। মাহাথির নিজেও আনোয়ারকেই নিজের উত্তরসূরি হিসেবে গড়ে তুলছিলেন।  আনোয়ারের অবস্থান এতটা সুদৃঢ় ছিল যে অন্য কেউ মাহাথিরের উত্তরসূরি হবার খায়েশ কখনো প্রকাশ করেনি।   একপর্যায়ে যে দুঃখজনক ঘটনা ঘটলো- তার পেছনে শুধু মাহাথিরকে দোষ দেয়াটা কোনমতেই  ঠিক হবে না।  আনোয়ার যে কিছু সিরিয়াস মিসক্যালকুলেশন করেছিলেন তা থেকে বোঝা যায় অতি মেধাবী লোক হয়েও এবং দীর্ঘদিন ক্ষমতার কেন্দ্রে থেকেও ক্ষমতার অন্দরমহলের মারপ্যাঁচ এবং ক্ষমতাশীল ব্যক্তিদের মেন্টালিটি তিনিও পুরোপুরি বুঝে উঠতে পারেন নি।   তাই যথাসময়ের আগেই তিনি কিছু প্রিম্যাচিউর চাইল্ডিশ  কাজ করে ফেলেছিলেন।   তিনি মাহাথিরের সবচেয়ে সফলতম এবং যোগ্যতম  মন্ত্রী ছিলেন যার জন্য তাকে মাহাথিরের  ডেপুটি বানানো হলো- কিন্তু তাতে মনে হয় তিনি  রিয়েলিটি সম্পর্কে সেন্স কিছুটা হারিয়ে ফেলেছিলেন।  ডেপুটি হয়ে যে তার অবস্থান পাকা হবার বদলে বরং আরো সেনসিটিভ  হয়ে গেছে-  তা বুঝতে পারেন নি।  প্রমোশন সবসময় পজিশন  শক্ত করে না-  বরং অনেকসময় আরো নড়বড়ে করে দেয়।  এতদিন  তাকে মাহাথিরের উত্তরসূরি হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছিল,  কিন্তু ডেপুটি হবার পরে আস্তে আস্তে তাকে 'উত্তরসূরি" থেকে "প্রতিদ্বন্দ্বী" করে ফেলা হলো!  এতে আনোয়ারের বিরোধীদের যেমন হাত ছিল তেমনি ওয়েস্টার্ন ইন্টেলিজেন্সগুলোরও হাত ছিল-  যারা কিছুতেই একজন ইসলামিস্ট ব্যাকগ্রাউন্ডের লোককে কোনমতেই শাসক হিসেবে মেনে নেবে না।  তার কিছুদিন আগেই ইন্দোনেশিয়ার সুহার্তোর পতনের পর তার প্রটেজে ভাইস প্রেসিডেন্ট হাবিবি "কনজারভেটিভ মুসলিম" হবার কারণে বেশিদিন থাকতে পারেন নি কারণ পশ্চিমারা চায় নি- অথচ তিনি মেধা যোগ্যতায় সুহার্তোর স্থলাভিষিক্ত হবার সবচাইতে যোগ্যতম ব্যক্তি ছিলেন।  আনোয়ার সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নেন নি।  তিনি বরং পশ্চিমাদেরকে অতিমাত্রায় আস্থাভাজন মনে করলেন এবং তাদের ফাঁদে পা দিলেন।  পশ্চিমা মিডিয়ায় উদ্দেশ্যমূলকভাবেই তাকে মাহাথিরের "উত্তরসূরীর" বদলে "প্রতিদ্বন্দ্বী" হিসেবে প্রচার করতে লাগলো।  আনোয়ার এসবের গভীরতা বা মারপ্যাঁচ বুঝতে পারেন নি।  এগুলো মাহাথিরের মনে কিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে- মাহাথির তো তখনো ক্ষমতা থেকে অবসরের সিদ্বান্ত নেন নি- এধরণের লোকেরা কিরকম আত্বসম্মান তথা ইগো কেন্দ্রিক হয়- তা তিনি উপলব্দি করেন নি।  তিনি এসব প্রচারণাকে  পজিটিভ মনে করে আহ্লাদিত হয়ে পড়েন এবং কিছু চরম হঠকারী  কাজ করে বসেন।  মাহাথির একবার বিদেশ সফরে গেলে আনোয়ারকে ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দিয়ে যান- আনোয়ার ভারপ্রাপ্তের বদলে স্থায়ী প্রধানমন্ত্রীর মতো আচরণ করেন, নিজে নিজেই  কিছু পলিসি গ্রহণ করে ফেলেন।  ইকোনোমিক ক্রাইসিসের সময় সরাসরি মাহাথিরের মতের সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থান নেন-  মাহাথিরের বদলে ওয়ার্ল্ড  ব্যাংক এর সাজেশনকে বেশি গুরুত্ব দেন।  আমেরিকা সফরে গেলে লাল গালিচা সংবর্ধনা গ্রহণ করেন, অথচ তার কিছুদিন আগে মাহাথির আমেরিকা সফরে গেলে তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয়নি!  আমেরিকান থিঙ্কট্যাংকগুলো তাকে নিয়ে বেশ মাতামাতি করে, মালয়েশিয়ার নানা উন্নয়নের জন্য মাহাথিরের বদলে তাকে ক্রেডিট দেয়া শুরু করে, বিভিন্ন জায়গায় তার লেকচার ও মিডিয়ায় ইন্টারভিউর  ব্যবস্থা করে,  অথচ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া সসবসময় মাহাথিরের সমালোচনা করতো।  এগুলো সবই ছিল আনোয়ারকে নিয়ে সিআইএর "ওভারগেম" খেলা- সিআইএ জানতো এতে মাহাথিরের সাইকোলজিক্যাল প্রতিক্রিয়া কি হবে- যা আনোয়ার বুঝতে পারেন নি। মাহাথিরের সবচেয়ে কাছের মানুষ হয়েও তার মেন্টালিটি বুঝেন নি এবং অতীতে বিরোধী বা প্রতিদ্বন্দ্বীদের সাথে মাহাথির কিরূপ আচরণ করেছিলেন- তা  মোটেই চিন্তা করেন নি। বরং মাহাথিরের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে প্রচারণা দেখে সম্ভবত নিজেকে সত্যিই  মাহাথিরের মতো জনপ্রিয় বা ক্ষমতাবান মনে করেছিলেন। তাই তিনি  বাড়তে বাড়তে একপর্যায়ে  সবচেয়ে বড় হঠকারিতা করেন দলের নির্বাচনে মাহাথিরের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দাঁড়িয়ে গিয়ে-  অথচ এতদিন মাহাথির অপ্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে নির্বাচিত হয়ে আসছিলেন।  তার এসব হঠকারী আচরণের মোক্ষম সুযোগ গ্রহণ করে তার বিরোধীরা।  তারা মাহাথিরকে বুঝাতে  সক্ষম হয় যে সুহার্তোর মতো তাকেও ক্ষমতাচ্যুত করার  ওয়েস্টার্ন ষড়যন্ত্র হচ্ছে এবং সেই ষড়যন্ত্রের পেছনে আনোয়ার জড়িত।   তখনকার মালয়েশিয়া এবং পার্শবর্তী ইন্দোনেশিয়ার যে পরিস্থিতি ছিল- সেই পরিস্থিতিতে যে কেউই আনোয়ারের বিরুদ্বে একইরকমের চরম পদক্ষেপ নিতেন।  তারপরেও বিষয়টা হয়তো এতটা তিক্ত বা কুৎসিত হতো না যদি মাহাথিরের নির্দেষক্রমে আনোয়ার স্বাভাবিকভাবে পদত্যাগ করতেন।  কিন্তু সেখানেও তিনি আরেক হঠকারী কাজ করে বসলেন।  সরকার প্রধান হিসেবে মাহাথির যে কাউকে মন্ত্রিসভায় নিতে পারেন,  পদত্যাগের নির্দেশও দিতে পারেন।  মাহাথির যখন আনোয়ারকে পদত্যাগ করতে বললেন তিনি তা  প্রফেশনালি না নিয়ে  বৈঠকে মাহাথিরের সাথে তর্ক শুরু করে দিলেন।  আমার মনে হয় তিনি স্বাভাবিকভাবে পদত্যাগ করলে মাহাথির তার বিরুদ্বে এমন চরম পদক্ষেপ নিতেন না, কিছুদিনের মধ্যেই  তাদের সম্পর্ক আবার রিকোভার করতো এবং মাহাথিরের অবসরের পরেই আনোয়ারই প্রধানমন্ত্রী হতেন।  এতো  কাঠগড় পোড়াতে হতো না,  প্রায় দুই দশক আনোয়ারের জীবন থেকে নষ্ট হতোনা,  মাঝখানে প্রায় দেড়যুগ দুই অপদার্থ শাসকের কবলে পড়ে  মালয়েশিয়ার এমন চরম ক্ষতি হতো না।

৪) মাহাথির-আনোয়ার সম্পর্কের ভাঙা-গড়ার মাঝে ক্ষমতার একটা বেসিক রুল সম্পর্কে সবার জন্য শিক্ষণীয় বিষয় হলো- এক বনে রাজা একজনই থাকবেন।  যতদিন পর্যন্ত আপনি রাজা হতে পারছেন না- ততদিন পর্যন্ত রাজার যতই প্রিয়ভাজন হন না কেন,  একটু সামলে চলতে হবে।   নিকট অতীতে প্রায় একইরকম একটা ঘটনা প্রায় ঘটতে চলছিল তুরস্কে- এরদোয়ান আর দাউতুগলোর মাঝে।  ভাগ্য ভালো যে দাউতুগলো সেই ভুল করেন নি যেই ভুল আনোয়ার করেছিলেন।  পশ্চিমা মিডিয়াতে অলরেডি দাউতুগলোকে নিয়ে আরেকটা ওভারগেম শুরু করে দিয়েছিল-  তাকে এরদোয়ানের চাইতে বেশি ইন্টেলেকচুয়াল,  এমনকি এরদোয়ানের চাইতে বেশি সৎ ও জনপ্রিয় ইত্যাদি কিছু প্রচারণা শুরু  করে দিয়েছিল। তিনিও প্রথমে কিছুটা আহ্লাদিত হয়ে পড়েছিলেন- প্রধানমন্ত্রী হয়ে নানা সস্তা জনপ্রিয়তার কাজ যেমন বাজার  পরিদর্শনে গিয়ে সাধারণ মানুষকে চুমু খাওয়া সেলফি তোলা ইত্যাদি শুরু করে দিয়েছিলেন।  এরদোয়ানের পছন্দের প্রেসিডেন্ট পদ্দতির বিরুদ্বে  মত প্রকাশ করতে শুরু করেন।  এসব  যে রাজার মনে কিছুটা বিরক্তি সৃষ্টি করছে তা বোঝা গেল রাজা একসময় প্রকাশ্যেই তার অনেকদিনের কাছের বন্ধু এবং আস্থাভাজন পরামর্শদাতা  সম্পর্কে বলে ফেললেন-  "ভুলে যাবেন না আপনাকে কে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছে"!   যাইহোক- বিষয়টা বেশিদূর  গড়ানোর আগেই দাউতুগলু  এমিকেবলি সরে পড়েছেন-  তিনিও রক্ষা পেয়েছেন,  তুরস্কও রক্ষা পেয়েছে। বিশ্বের নানাদেশে ইসলামিস্টরা জোটবদ্ব হয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার ঘটনা বাড়ছে-  তাদের নেতৃত্বপর্যায়ের লোকদের  এই জিনিসগুলো  মাথায় রাখতে হবে।  নিজেদের  পজিশন সম্পর্কে যেন অহেতুক বাগড়ম্বতা পেয়ে না বসে।  কখন কনফিডেন্স দেখাতে হবে আর কখন এমিকেবলি সরে যেতে হবে- সে সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা থাকতে হবে। 

বাংলাদেশে ২০০১ সালে চার দলীয় জোট সরকারকে  আওয়ামী  মিডিয়ায়  বলা শুরু করে দেয় "খালেদা-নিজামী" সরকার। অথচ দুইজনের ক্ষমতার  অংশের  হিসেবে আকাশ পাতাল পার্থক্য।  কারণ একটাই-  নিজামীকে খালেদার প্রতিদ্বন্দ্বী করে ফেলা।  নিজামী চমৎকার সুবক্তা  ছিলেন,  সংসদে তার হাসিমুখে আস্তে আস্তে বলা প্রাঞ্জল  বক্তৃতাগুলো হতো অসাধারণ স্টেটসমেন সুলভ, অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতার স্টাইল ছিল গতানুগতিক বাংলাদেশী মেঠো  রাজনৈতিক  ধারার।  এনিয়ে কথা শুরু হলো,  কয়েকদিন পরে দেখা গেল প্রধানমন্ত্রী বক্তৃতার ঢং পরিবর্তন করে নিজামীর স্টাইলে "স্টেটসমেন" সুলভ বক্তৃতা দিচ্ছেন,  সাথে নিজামীর মন্ত্রিত্ব পরিবর্তিত হয়ে একধাপ নিচে।  এই হলো রাজা/রানীদের মেন্টালিটি।    এই মেন্টালিটি না বুঝে বেশি ওভারস্মার্ট  দেখাইতে গেলে ধরা খেতে হবে।   ক্ষমতার ধরা শক্ত ধরা,  ক্ষমতার খেলা কুৎসিত  খেলা -  অনেক ভালো মানুষ এসব  কুটিলতা  কল্পনা করতে পারে না, এসব মারপ্যাঁচ বুঝে   উঠতে পারে না,  তাই মাঝে মাঝে ধরা খায়।  কিন্তু কিছু শেয়াল এগুলো ভালো বুঝে।  বাংলাদেশের এরকম একটা ধূর্ত শেয়াল একবার বলেছিল- "খোদা ধরলে ছাড়ে,  কিন্তু হাসিনা ধরলে ছাড়ে  না"-  শেয়ালে শেয়াল চিনতে পেরেছিল!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন