শনিবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৬

আমাদের পাপের কারনেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে বঙ্গোপসাগর

আমাদের পাপের কারণেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে বঙ্গোপসাগর

ঘূর্ণিঝড়ের ইংরেজি প্রতিশব্দ ‘সাইক্লোন’ গ্রিক শব্দ ‘কাইক্লোস’ থেকে এসেছে। কাইক্লোস শব্দের অর্থ কুন্ডলী পাকানো সাপ। ঘূর্ণিঝড়ের উপগ্রহ চিত্র থেকে এমনতর নামকরণের যথার্থতা বোঝা যায়। আর ঘূর্ণিঝড় হলো গ্রীষ্মমন্ডলী ঝড় বা বায়ুমন্ডলীয় একটি উত্তাল অবস্থা যা বাতাসের প্রচন্ড ঘূর্ণায়মান গতির ফলে সংঘটিত হয়। এটি সাধারণ প্রাকৃতিক দুর্যোগসমূহের একটি।
যা আমাদের বঙ্গোপসাগরে প্রায় প্রতিবছরই কমবেশি সংগঠিত হয়, বাংলাদেশের উপকূলবাসীর জন্য এটা অনেকটা স্বাভাবিক ঘটনাই বলতে হবে। তবে কোনো ঘূণিঝড় আবার চরম ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে ধ্বংস করে দেয় উপকূলীয় জনপদ। ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়, ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝর, ২০০৭ সালের সিডর, ২০০৮ সালের নার্গিস এমনই কয়েকটি ধ্বংসাত্মক ঘূর্ণিঝড়।

কিন্তু আগে যেখানে বছরে একটি বা দুটির বেশি ঘূর্ণিঝড় হতো না। অথচ, এই ২০১৬ সালে এসে লক্ষ্য করা যাচ্ছে বঙ্গোপসাগরে কয়েক দিন পরপরই সৃষ্ট হচ্ছে এক একটি ঘূর্ণিঝড়। নভেম্বর মাসের শুরুতে এসে আমরা মোকাবিলা করছি ঘূর্ণিঝড় ‘নাডার তাণ্ডব।

এর আগে গত মে মাসে আঘাত হেনেছিল ‘রোয়ানু’। যদিও শেষ মুহুর্তে এসে গতিপথ বদলিয়ে বার্মা ও আসাম অভিমুখে চলে গিয়েছিল ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানু’। রোয়ানুর প্রভাব শেষ হতে না হতেই আতঙ্ক হয়ে দেখা দিয়েছিল ঘূর্ণিঝড় ‘সাত্তার’। আগস্ট মাসে ধেয়ে আসে ঘূর্ণিঝড় ‘মহাসেন।

আমাদের বঙ্গোপসাগরে এত ঘন ঘন ঘূর্ণিঝড় কেন হচ্ছে? উত্তর খুবই সহজ, আসলে আমাদের পাপের ফলেই এসব হচ্ছে। আমাদের বেহিসাবি আচরণের কারণে ধ্বংস হচ্ছে সবুজ বন, অন্যদিকে অনিয়ন্ত্রিতভাবে গড়ে তোলা কলকারখানা-যানবাহন-ইঞ্জিনের কালো ধুয়া, কার্বন মনো অক্সাইডসহ নানা ক্ষতিকর বায়বীয় উপাদান মিশ্রিত হচ্ছে। ফলে ভারসাম্য হারাচ্ছে প্রকৃতি, নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। আর তারই বদলা হিসেবে প্রকৃতি নিচ্ছে ভয়ঙ্কর রূপ।

এর ফলেই কখনো নিম্নচাপ, কখনো ঘূর্ণিঝড়, কখনো-বা জলোচ্ছ্বাসের মুখোমুখি হচ্ছি আমরা। এসব আসলেই আমাদের প্রকৃতি-পরিবেশ ধ্বংসের পাপের বদলা ছাড়া আর কিছুই নয়। তাই আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করতে হলে পরিবেশ-জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব নিয়ে ভাবতে হবে এখনই।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন